মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর, ২০১৪

সৎ লোকদের পুরুস্কার এবং জান্নাতের চিত্র



সৎ লোকদের পুরুস্কার এবং জান্নাতের চিত্র

সূরা আদ দাহর
) (বেহেশতে) নেককার লোকেরা   পানপাত্র থেকে এমন শরাব পান করবে যাতে কর্পূর পানি সংমিশ্রিত থাকবে৷
) এটি হবে একটি বহমান ঝর্ণা৷   আল্লাহর বান্দারা   যার পানির সাথে শরাব মিশিয়ে পান করবে এবং যেখানেই ইচ্ছা সহজেই তার শাখা-প্রশাখা বের করে নেবে৷ 
) এরা হবে সেসব লোক যারা (দুনিয়াতে )মানত পূরণ করে   সে দিনকে ভয় করে যার বিপদ সবখানে ছড়িয়ে থাকবে৷
) আর আল্লাহর মহব্বতে   মিসকীন,ইয়াতীম, এবং বন্দীকে    খাবার দান করে
) এবং (তাদেরকে বলে) আমরা একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশ্যেই তোমাদের খেতে দিচ্ছি৷ আমরা তোমাদের কাছে এর কোন প্রতিদান বা কৃতজ্ঞতা   পেতে চাই না৷
১০) আমরা তো আমাদের রবের পক্ষ থেকে সেদিনের আযাবের ভয়ে ভীত, যা হবে কঠিন বিপদ ভরা অতিশয় দীর্ঘ দিন৷
১১) আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সেদিনের অকল্যাণ থেকে রক্ষা করবেন এবং তাদেরকে সজীবতা আনন্দ দান করবেন৷ 
১২) আর তাদের সবরের বিনিময়ে    তাদেরকে জান্নাত রেশমী পোশাক দান করবেন৷
১৩) তারা সেখানে উঁচু আসনের ওপরে হেলান দিয়ে বসবে৷ সেখানে রোদের উত্তাপ কিংবা শীতের তীব্রতা তাদের কষ্ট দেবে না  
১৪) জান্নাতের বৃক্ষরাজির ছায়া তাদের ওপর ঝুঁকে পড়ে ছায়া দিতে থাকবে ৷আর তার ফলরাজি সবসময় তাদের নাগালের মধ্যে থাকবে (তারা যেভাবে ইচ্ছা চয়ন করতে পারবে)  
১৫) তার সামনে রৌপ্য পাত্র    সচ্ছ কাঁচের পাত্রসমূহ পরিবেশিত হতে থাকবে ৷কাঁচ পাত্রও হবে রৌপ্য জাতীয় ধাতুর   
১৬) যা (জান্নাতের ব্যবস্থাপকরা) যথাযথ পরিমাণে পূর্ণ করে রাখবে৷  
১৭) সেখানে তাদের এমন সূরা পাত্র পান করানো হবে যাতে শুকনো আদার সংমিশ্রণ থাকবে  
১৮) এটি জান্নাতের একটি ঝর্ণা যা সালসাবীল নামে অভিহিত৷
১৯) তাদের সেবার জন্য এমন সব কিশোর বালক সদা তৎপর থাকবে যারা চিরদিনই কিশোর থাকবে৷ তুমি তাদের দেখলে মনে করবে যেন ছড়ানো ছিটানো মুক্তা৷  
২০) তুমি সেখানে যে দিকেই তাকাবে সেদিকেই শুধু নিয়ামত আর ভোগের উপকরণের সমাহার দেখতে পাবে এবং বিশাল সাম্রাজ্যের সাজ-সরঞ্জাম তোমাদের দৃষ্টিগোচর হবে৷  
২১) তাদের পরিধানে থাকবে মিহি রেশমের সবুজ পোশাক এবং মখমল সোনালী কিংখাবের বস্ত্ররাজি৷   আর তাদেরকে রৌপ্যের কঙ্কন পরানো হবে   আর তাদের রব তাদেরকে অতি পবিত্র শরাব পান করাবেন৷ 
২২) হচ্ছে তোমাদের জন্য প্রতিদান৷ কারণ, তোমাদের কাজ কর্ম মূল্যবান প্রমাণিত হয়েছে৷

'মানুষের মতো মানুষ' সন্তান বটে!





'মানুষের মতো মানুষ' সন্তান বটে!

হাসান শান্তনু

অধ্যাপক ফারহানা চৌধুরী। তিনি মারা যাবেন আর মাত্র তিন ঘণ্টা পর। হয়তো 'আরো পরে মারা' যেতেন। যে কারণে 'সময়ের আগেই তাঁকে চলে যেতে হলো' সেটা বেশ আধুনিক! পাশ্চাত্যের আধুনিকতা!

ফারহানা চৌধুরীর স্বামী অধ্যাপক শাহেদ চৌধুরী তাঁদের ঔরসে আছেন তিন ছেলে, এক মেয়ে চারজনই থাকেন বিদেশে বড্ড আধুনিক জীবনের ঢেউয়ে দোলায়িত তাঁদের জীবন বউ, বান্ধবী, বন্ধুর সঙ্গে যৌনতায় লেপ্টে থাকা জীবন মদ, সিগারেট, যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট, টাকা- তাঁদের জীবনের সবচেয়ে বড় দিক তারা এতো আধুনিক, বা তাঁদের কাছে সময় এতো মূল্যবান যে, মাকে শেষবারের মতো দেখে 'সময় নষ্ট করার সময়টুকু' পর্যন্ত নেই!

তবে মারা যাওয়ার আগে ফারহানা চৌধুরীর মন প্রচণ্ড কেঁদেছে ছেলেমেয়েকে দেখতে। নিজের জরায়ু ছেঁড়া সন্তানকে শেষবারের মতো আদর করতে। ছেলেমেয়েগুলো 'মানুষের মতো মানুষ' বটে!
ফারহানা চৌধুরী স্বামীসহ থাকতেন ঢাকায় তিনি ক্যান্সারে ভুগছিলেন ছয় মাস ধরে। মৃত্যুর তিন ঘণ্টা আগে থেকে তাঁর স্বামী শুরু করেন ছেলেমেয়ের মুখ মাকে দেখানোর 'সংগ্রাম'

প্রথমে শাহেদ চৌধুরী ফোন করেন যুক্তরাষ্ট্রে বাসরত বড় ছেলেকে। বড় ছেলে বাবাকে সাফ জানিয়ে দিলেন, 'মা অসুস্থ্য তো চিকিৎসক দেখাও। তোমাদের বউ মার পেটে অনেক বছর পর বাচ্চা ধরেছে।  অবস্থায় ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই মাকে দেখতে আসতে পারছি না।'

শাহেদ চৌধুরী এরপর ফোন দিলেন মেজো ছেলেকে। তিনি থাকেন কানাডায়। তিনি জানান, 'বাবা, আমি নতুন প্রতিষ্ঠানে চাকরি নিয়েছি। এখন কিছুতেই ছুটি পাবো না। আগামী মাস তিনেকের মধ্যে দেশে আসতে পারছি না। মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাও।'

খানিক পর শাহেদ চৌধুরী ফোন দিলেন যুক্তরাজ্যে থাকা তাঁর ছোট ছেলেকে। মা দেখতে চাচ্ছেন বলতেই ছোট ছেলে বলতে থাকেন, 'বাবা, তোমার আর মায়ের স্বপ্ন ছিল আমি পিএইচডি করবো। এর শেষদিকে আছি, বাবা। এখন দেশে ফেরা সম্ভব নয়। পড়াশোনা শেষ করেই ফিরবো।'

সবশেষ শাহেদ চৌধুরী ফোন দিলেন যুক্তরাজ্যে থাকা তাঁদের একমাত্র মেয়েকে। মেয়ে জানান, 'ড্যাডি, তোমাদের জামাই নতুন ব্যবসা শুরু করেছে।  মুহূর্তে দেশে এলে ব্যবসা সামলাবে কে? প্লিজ, রাগ করো না। আমরা এখন আসতে পারছি না।'

ফোন করতে করতে তিন ঘণ্টা কেটে গেলো। প্রত্যেকটা ফোন শেষে ছেলেমেয়ের বক্তব্য পাশে শুয়ে থাকা মৃত্যু পথের যাত্রী স্ত্রীকে জানাচ্ছিলেন পরাজিত শাহেদ চৌধুরী। সবশেষে মেয়ের বক্তব্য জানানোর পর স্ত্রীর শরীরে হাত দিতেই অনুভব করেন, বেশ ঠাণ্ডা। নেয়া হলো হাসপাতালে। চিকিৎসকরা জানালেন, 'ফারহানা চৌধুরী আর নেই'

বি:দ্র:- ঘটনাটা সত্য। নামগুলো কাল্পনিক। তাঁদের প্রকৃত নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছি না। ঘটনাটা ঈদের চার, পাঁচদিন আগের

আরেকটা বিষয়, কোনো সন্তান তার বাবা, মায়ের কাছ থেকে যতোটা আদর, ভালোবাসা পায়, ততোটা তার বাবা, মাকে ফেরত দিতে পারে না। এটা অনাদিকালের নিয়ম। কারণ, স্নেহ নাকি সবসময় নিচের দিকে বয়ে চলে। তাই বলে কি এতোটা নিচের দিকে? আর 'মানুষের মতো মানুষ' হওয়ার ঠিক সংজ্ঞা কোনটা?