সা’দের প্রাসাদে আগুন
সেনাপতি
সা’দ।মুসলিম বাহিনীর অধিনায়ক সা’দ পারস্য জয় করেছেন।
বিজয়ের পর হযরত
উমর (রাঃ) তাকে কুফার শাসনকর্তা নিযুক্ত করলেন।সেনাপতি সা’দ তার বিজয় অভিযানকালে
পারস্য সম্রাটের বিলাসব্যাসন ও আরাম আয়েশের আফুরান নজীর দেখেছেন।
কুফা নগরী
সাজাবার সময় বোধহয় তার সেসব কথা মনে পড়েছিল।তিনি নিজের জন্যও তাই সেখানে একটি প্রাসাদ তৈরী করলেন এবং সম্রাট খসরুর প্রাসাদের
একটি তোরন এনে তার প্রাসাদে সংযুক্ত করলেন।বোধহয় বিজেতা সা’দের মনে আয়েশের কিঞ্চিত
আমেজ এসে বাসা বেধেছিল। এ নিষ্কলুষ ভোগ তার কাছে কোন খারাপ বিষয় বলে মনে হয়নি।
কিন্তু খবরটা
খলীফা হযরত উমর (রাঃ) এর কাছে পৌছতেই তিনি বারুদের মত জ্বলে
উঠলেন।সেনাপতি সা’দের
মতি বিভ্রম ঘটেছে কিনা তিনি ভেবে পেলেন না।হযরত উমর (রাঃ) ত্বরিত একজন দূত কে
সা’দের নামে একটি চিঠি দিয়ে বললেন,শোন, পৌছেই তুমি সা’দের প্রাসাদে আগুন ধরিয়ে
দিবে সা’দ তোমাকে এর কারন জিজ্ঞেস করলে এ চিঠিখানা দিবে। দূত ছুটল কুফার দিকে।
হযরত উমর (রাঃ) এর যা নির্দেশ ছিল,সে তাই করল। সা’দের প্রাসাদে আগুন ধরিয়ে দিল।স্তম্ভিত
সা’দ খলীফার এর কারন দূত এর এ কান্ড দেখে তাকে এর কারন জিজ্ঞেস করলেন। দূত বিনা
বাক্য ব্যয়ে খলীফার চিঠিখানা তার হাতে তুলে দিলেন।সা’দ চিঠিখানা তার চোখের সামনে
মেলে ধরলেন।
তাতে লেখা ছিল:
‘শুনতে পেলাম,নিজের আরাম আয়েশের জন্য খসরুর
প্রাসাদের মত তুমি এক প্রাসাদ গড়েছো।শুনেছি , খসরুর প্রাসাদের একটি কবাটও এনে
তোমার প্রাসাদে লাগিয়েছ। দারোয়ান, সিপাহী রেখেছ। এতে প্রজাদের অভাব অভিযোগ জানতে
অসুবিধা হবে। তা বোধহয় তুমি নিশ্চয় ভাবনি। নবীর পথ পরিত্যাগ করে খসরুর পথ
ধরেছ।ভুলোনা,প্রাসাদে বাস করেও খসরুদের দেহ কবরে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে আর নবী সামান্য
কুটিরে বাস করেও সর্বোচ্চ জান্নাতে উন্নীত হয়েছেন।মাসলামাকে তোমার প্রাসাদ পুড়িয়ে
ফেলার জন্য পাঠালাম।বাস করার জন্য একটি কুটির ও একটি খাজাঞ্চি খানাই যথেষ্ঠ”।
সা’দ নত
মস্তকে,অশ্রুসিক্ত নয়নে খলীফার নির্দেশ মেনে নিলেন।
আমরা এমন শাসকই
চাই।
(সংগৃহীত –আমরা
সেই সে জাতি-আবুল আসাদ—বই থেকে)
”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন