সোমবার, ৩ জুন, ২০১৩

মূর্তি ও ভাস্কর্যের ব্যাপারে ইসলামের হুকুম


মূর্তি  ভাস্কর্যের ব্যাপারে ইসলামের হুকুম

ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমস্ত মানুষকে এক আল্লাহর দিকে ডাকার জন্য আর সাথে সাথে আউলিয়া কিংবা অন্যান্য নেককারদের অথবা অন্য কোন গাইরুল্লাহর ইবাদত করা হতে বিরত রাখার জন্য এদের পূজা করা হয় মূর্তি, ভাস্কর অথবা ছবি বানিয়ে এই দাওয়াত বহু পূর্ব হতে চালু হয়েছে, যখন থেকে আল্লাহপাক তাঁর রাসূলদের প্রেরণ করা শুরু করেছেন মানুষের হিদায়েতের জন্য

আল্লাহ তায়ালা বলেন:

" 
আর অবশ্যই আমি প্রত্যেক জাতির নিকট রাসূল প্রেরণ করেছি এই বলে যে, তোমরা এক আল্লাহর ইবাদত কর, আর তাগুত(তাগুত হচ্ছে  সমস্ত ব্যক্তি বা জিনিস যাদের ইবাদত করা হয় আল্লাহকে ছেড়ে, আর তাতে তারা রাজী খুশী থাকে) থেকে বিরত থাক"
(
সূরা নাহল ১৬: ৩৬ আয়াত)

এই সমস্ত মূর্তির কথা সুরা নুহতে উল্লেখিত হয়েছে এতে সবচেয়ে বড় দলিল হল,  মুর্তিগূলি ছিল  যামানার সর্বোত্তম নেককারগণের এই হাদীস ইবনে আব্বাস রা. হতে বুখারীতে বর্ণিত হয়েছে আল্লাহপাকের  কথার ব্যাখ্যায়:

"
আর তারা বলল. তোমরা কোন অবস্থাতেই তোমাদের উপাস্যদেরকে পরিত্যাগ কর না, আর ওদ্দা, সূয়া, ইয়াগুছ, ইয়াউক  নাসরাকে কক্ষনই পরিত্যাগ কর না আর তারা তো অনেককেই গোমরাহ করেছে"
(
সূরা নূহ, আয়াত : ২৩  ২৪)

তিনি বলেন: তারা ছিলেন নূহ . কওমের নেককার বান্দা যখন তারা মৃত্যুমুখে পতিত হন তখন শয়তান তাদের গোপনে কুমন্ত্রনা দেয় যে তারা যে সমস্ত স্থানে বসত সেখানে তাদের মূর্তি বানিয়ে রাখ, আর  মূর্তিদেরকে তাদের নামেই পরিচিত কর তখন তারা তাই করল, কিন্তু তখনও তাদের ইবাদত শুরু হয়নি তারপর যখন  যামানার লোকেরাও মারা গেল, তখন তাদের পরের যামানার লোকেরা ভূলে গেল যে, কেন  মূর্তিগুলির সৃষ্টি করা হয়েছিল তখনই তাদের পুজা শুরু হয়ে গেল (ফতহুল বারী / পৃষ্ঠা)

এই ঘটনা হতে এটা শিক্ষা পাওয়া যায় যে, গাইরুল্লাহর ইবাদতের কারণগুলির একটি হল এই যে, জাতীয় নেতাদের মূর্তি তৈরী করা অনেকেরই ধারনা এই সময় মূর্তি , বিশেষ করে ছবি হারাম নয়, বরঞ্চ হালাল কারণ, বর্তমানে কেউ ছবি বা মূর্তির পূজা করে না কিন্তু এটা কয়েকটি কারণে গ্রহণযোগ্য নয়:

বর্তমান যামানায়ও মূর্তি  ছবির পূজা হয়ে থাকে যেমন গির্জা সমূহে আল্লাহকে ছেড়ে ইসা .  তার মাতা মারইয়ামের . ছবির পূজা হয় এমনকে ক্রুশের সামনে তারা রুকুও করে থাকে বিভিন্ন ধরনের তৈলচিত্র তৈরী করা হয়েছে ইসা .  তার মায়ের উপর, যা খুবই উচ্চ মুল্যে বিক্রি করা হয় আর উহা ঘরে ঝুলিয়ে রাখা হয় তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন  ইবাদত করার জন্য

এই সমস্ত ভাস্কর যা দুনিয়ার দিক দিয়ে উন্নত  রুহানী দিক দিয়ে অনগ্রসর জাতি কিংবা জাতীয় নেতারা সম্মান প্রর্দশন করেন তাদের মস্তক হতে টুপি খুলে, অথবা তাদের সম্মুখ দিয়ে যাবার সময় তাদের মাথা ঝুকিয়ে অতিক্রম করে যেমন আমেরিকায় জর্জ ওয়াশিংটনের ভাস্কর্য, ফ্রান্সে নিপোলিয়ানের মূর্তি, রাশিয়ায় লেলিন  ষ্টালিনের ভাস্কর্যের সম্মুখে এবং  জাতীয় ভাস্কর্য বড় বড় রাস্তায় স্থাপন করা হয়েছে তাদের সম্মুখ দিয়ে অতিক্রমের সময় পথচারিরা মস্তক ঝুঁকিয়ে সালাম দেয় এমনকি ইই ধরনের ভাস্কার্যের চিন্তা ভাবনা অনেক আরব দেশে ডর্যন্ত ছড়িয়ে পড়িছে এভাবেই তারা কাফেরদের অনুসরন করতে উদ্যোগী হয়েছে, আর রাস্তা ঘাটে এরকম ভাস্কর্যের সৃষ্টি করেছে আস্তে আস্তে এই সমস্ত ভাষ্কর্য  মূর্তি আরবের মুসলিম দেশগুলোতে ছড়িয়ে পড়েছে, যদিও ওয়াজিব ছিল এই জাতীয় ভাস্কর্য তৈরী না করে  ধন দৌলত মসজিদ মাদ্রাসা, হাসপাতাল, সাহায্য সংস্থা ইত্যাদি তৈরীর জন্য ব্যয় করা যাতে এই উপকার সকলের নিকট পৌছেঁ, যদিও তারা এটা তাদের নামে নাম করণ করুক না কেন তাতে কোন ক্ষতি নেই

আর এমন একদিন আসবে, যখন এই ভাস্কর্যগুলির সম্মুখে মস্তক অবনত করে সম্মান প্রদর্শন করা হবে এবং তাদের ইবাদত করা হবে, যেমনভাবে ইউরোপ, তুর্কী এবং অন্যান্য দেশে হচ্ছে আর তাদের পূর্বে নুহ . এর কওম তা করেছিল তারা তাদের নেতাদের ভাস্কর্য তৈরী করেছিল, অত:পর তাকে সম্মান করত  ইবাদত করত

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আমি আমার উম্মতের জন্য পথভ্রষ্ট শাসকদের বেপারে বেশি আশংকা বোধ করছি যদি একবার তাদের উপর তলওয়ার উঠে তবে সেই তলওয়ার কিয়ামত পর্যন্ত আর নামবে না আর ততোক্ষণ পর্যন্ত কিয়ামত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আমার একদল উম্মত মুশরিকদের সাথে মিলিত হবে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত না আমার উম্মতের একটা দল মূর্তিপূজা করবে [আবু দাউদঃ ৪২৫২]

রাসূল সা. আলীকে রা. হুকুম করে বলেন:

"
যেখানে যত মুর্তিই দেখ না কেন, তাকে ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করে ফেল আর যত উচুঁ কবর দেখবে, তাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দিবে" (মুসলিম)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন