অপরূপ সুন্দরী রাজকন্যা ও এক হাজার দিনার ♥ ♥
হযরত উসমান (রা) এর শাসনকাল । নীল ভূমধ্যসাগর তীরের তারাবেলাস নগরী । পরাক্রমশালী রাজা জার্জিসের প্রধান নগরী এটা । এই পরাক্রমশালী রাজা ১ লক্ষ ২০ হাজার সৈন্য নিয়ে আবদুল্লাহ ইবন সা'দের নেতৃত্বাধীন মুসলিম বাহিনীর অগ্রাভিযানের পথ রোধ করে দাঁড়ালেন । স্বয়ং রাজা জার্জিস তার বাহিনীর পরিচালনা করছেন । পাশে রয়েছে তার মেয়ে । অপরূপ সুন্দরী তার সে মেয়ে ।
যুদ্ধ শুরু হল । জার্জিস মনে করেছিলেন তার দুর্ধর্ষ বাহিনী এবার মুসলিম বাহিনীকে উচিত শিক্ষা দেবে । কিন্তু তা হল না । মুসলিম বাহিনীর পাল্টা আঘাতে জার্জিস বাহিনীর ব্যুহ ভেঙ্গে পড়ল । উপায়ান্তর না দেখে তিনি সেনা ও সেনানীদের উৎসাহিত করার জন্য ঘোষণা করলেন, "যে বীর পুরুষ মুসলিম সেনাপতি আবদুল্লাহর ছিন্ন শির এনে দিতে পারবে, আমার কুমারী কন্যাকে তার হাতে সমর্পণ করবো ।"
জার্জিসের এই ঘোষণা তার সেনাবাহিনীর মধ্যে উৎসাহের এক তড়িৎ প্রবাহ সৃষ্টি করল । তাদের আক্রমণ ও সমাবেশে নতুন উদ্যোগ ও নতুন প্রাণাবেগ পরিলক্ষিত হলো । জার্জিসের সুন্দরী কন্যা লাভের উদগ্র কামনায় তারা যেন মরিয়া হয়ে উঠল। তাদের উন্মাদ আক্রমণে মুসলিম রক্ষা ব্যুহে ফাটল দেখা দিল । মহানবীর শ্রেষ্ঠ সাহাবাদের একজন- হযরত যুবাইর (রা)ও সে যুদ্ধে শরীক ছিলেন । তিনি সেনাপতি সা'দকে পরামর্শ দিলেন, "আপনিও ঘোষণা করুন, যে তারাবেলাসের শাসনকর্তা জার্জিসের ছিন্নমুন্ড এনে দিতে পারবে, তাকে সুন্দরী জার্জিস দুহিতাসহ এক হাজার দিনার বখশিশ দেয়া হবে ।" যুবাইরের পরামর্শ অনুসারে সেনাপতি সা'দ এই কথাই ঘোষণা করে দিলেন ।
তারাবেলাসের প্রান্তরে ঘোরতর যুদ্ধ সংঘটিত হলো । যুদ্ধে জার্জিস পরাজিত হলেন । তার কর্তিত শিরসহ জার্জিস কন্যাকে বন্দী করে মুসলিম শিবিরে নিয়ে আসা হলো । কিন্তু এই অসীম সাহসিকতার কাজ কে করলো? এই বীরত্বের কাজ কার দ্বারা সাধিত হলো? যুদ্ধের পর মুসলিম শিবিরে সভা আহূত হলো । হাজির করা হলো জার্জিস-দুহিতাকে । সেনাপতি সা'দ জিজ্ঞেস করলেন, "আপনাদের মধ্যে যিনি জার্জিসকে নিহত করেছেন, তিনি আসুন । আমার প্রতিশ্রুত উপহার তাঁর হাতে তুলে দিচ্ছি ।"
কিন্তু গোটা মুসলিম বাহিনী নীরব নিস্তব্ধ । কেউ কথা বললো না, কেউ দাবী নিয়ে এগুলোনা । সেনাপতি সা'দ বারবার আহ্বান জানিয়েও ব্যর্থ হলেন। এই অভূতপূর্ব ব্যাপার দেখে বিস্ময়ে হতবাক হলেন জার্জিস দুহিতা । তিনি দেখতে পাচ্ছেন তার পিতৃহন্তাকে । কিন্তু তিনি দাবী নিয়ে আসছেন না কেন? টাকার লোভ, সুন্দরী কুমারীর মোহ তিনি উপেক্ষা করছেন? এত বড় স্বার্থকে উপেক্ষা করতে পারে জগতের ইতিহাসে এমন জিতেন্দ্রীয় যোদ্ধা-জাতির নাম তো কখনও শুনেননি তিনি । পিতৃহত্যার প্রতি তার যে ক্রোধ ও ঘৃণা ছিল, তা যেন মুহূর্তে কোথায় অন্তর্হিত হয়ে গেল । অপরিচিত এক অনুরাগ এসে সেখানে স্থান করে নিল ।
অবশেষে সেনাপতির আদেশে জার্জিস দুহিতাই যুবাইরকে দেখিয়ে দিলেন । বললেন, "ইনিই আমার পিতৃহন্তা, ইনিই আপনার জিজ্ঞাসিত মহান বীর পুরুষ ।" সেনাপতি সা'দ যুবাইরকে অনুরোধ করলেন তাঁর ঘোষিত উপহার গ্রহণ করার জন্য ।
যুবাইর উঠে দাঁড়িয়ে অবনত মস্তকে বললেন, "জাগতিক কোন লাভের আশায় আমি যুদ্ধ করিনি । যদি কোন পুরষ্কার আমার প্রাপ্য হয় তাহলে আমাকে পুরষ্কৃত করার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট ।
****একটি অসাধারণ ইসলামিক ইতিহাস****
উমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর শাসন আমল, একদিন ২জন লোক এক বালককে টেনে ধরে নিয়ে আসল তাঁর দরবারে । উমর রাঃ তাদের কাছে জানতে চাইলেন যে, 'ব্যাপার কি, কেন তোমরা একে এভাবে টেনে এনেছ ?' তারা বলল 'এই বালক আমাদের পিতাকে হত্যা করেছে ।'
উমর রাঃ বালকটিকে বললেন 'তুমি কি সত্যিই তাদের পিতাকে হত্যা করেছ ?' বালকটি বলল' হ্যা আমি হত্যা করেছি তবে তা ছিল দূর্ঘটনাবশত, আমার উট তাদের বাগানে ঢুকে পড়েছিল তা দেখে তাদের পিতা একটি পাথর ছুড়ে মারল,যা উটের চোখে লাগে । আমি দেখতে পাই যে উটটি খুবই কষ্ট পাচ্ছিল । যা দেখে আমি রাগান্বিত হই এবং একটি পাথর নিয়ে তার দিকে মারি, পাথরটি তার মাথায় লাগে এবং সে মারা যায় ।'
উমর (রাঃ) ২ভাইকে বলেলন 'তোমরা কি এ বালককে ক্ষমা করবে ?' তারা বলল 'না, আমরা তার মৃত্যূদন্ড চাই ।' উমর রাঃ বালকটির কাছে জানতে চাইলেন 'তোমার কি কোন শেষ ইচ্ছা আছে?' বালকটি বলল 'আমার আব্বা মারা যাওয়ার সময় আমার ছোট ভাইয়ের জন্য কিছু সম্পদ রেখে যান ,যা আমি এক জায়গায় লুকিয়ে রেখেছি ।
আমি তিন দিন সময় চাই, যাতে আমি সেই জিনিস গুলো আমার ভাইকে দিয়ে আসতে পারি । আমার কথা বিশ্বাস করুন ।' উমর রাঃ বললেন 'আমি তোমাকে বিশ্বাস করতে পারি যদি তুমি এক জন জামিন জোগাড় করতে পার যে নিশ্চয়তা দেবে যে তুমি ফিরে আসবে ?' বালকটি দরবারের চারদিকে তাকাল এত মানুষের মধ্যে কেউই তার জামিন হল না ।সবাই নিচের দিকে তাকিয়ে রইল।
হঠাত্ দরবারের পেছন থেকে একটি হাত উঠল । কার হাত ছিল এটি? প্রখ্যাত সাহাবী আবু যর গিফারী (রাঃ) , তিনি বললেন 'আমি তার জামিন হব' চিন্তা করুন জামিন মানে হল, যদি বালকটি ফিরে না আসে তবে আবু যর গিফারী রাঃ এর শিরচ্ছেদ করা হবে। সুতরাং, বালকটিকে ছেড়ে দেওয়া হল । এক দিন গেল, দ্বিতীয় দিনেও বালকটি আসল না, তৃতীয় দিনে ২ভাই আবু যর গিফারী (রাঃ) এর কাছে গেল ।
আবু যর (রাঃ) বললেন 'আমি মাগরিব পর্যন্ত অপেক্ষা করব'। মাগরিবের কিছুক্ষণ আগে আবু যর গিফারী (রাঃ) দরবারের দিকে রওনা হলেন । মদিনার লেকজন তাঁর পেছন পেছন যেতে লাগল । সবাই দেখতে চায় কি ঘটে ।আবু যর (রাঃ) একটি বালকের ভুলের কারণে আজ জীবন দিচ্ছেন । হঠাত্ আজানের কিছুক্ষণ আগে বালকটি দৌড়ে আসল । লোকেরা সবাই অবাক হল ।
উমর (রাঃ) বললেন 'হে বালক তুমি কেন ফিরে এসেছ? আমিতো তোমার পিছনে কোন লোক পাঠাইনি । কোন জিনিসটা তোমাকে ফিরিয়ে আনল?' বালকটি বলল 'আমি চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলিম কথা দিয়েছিল কিন্তু সে তা রাখেনি তাই আমি ফিরে এসেছি'। উমর (রাঃ) আবু যর (রাঃ) কে বললেন, 'হে আবু যর তুমি কেন এই বালকের জামিন হলে?'
আবু যর রাঃ বললেন, 'আমি দেখলাম একজন মুসলমানের সাহায্য প্রয়োজন, আমি চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলমানের সাহায্য প্রয়োজন ছিল কিন্তু কোন মুসলমান তাকে সাহায্য করেনি।' এ কথা শুনে দুই ভাই বলল, 'আমরাও চাই না যে কেউ বলুক একজন মুসলমান ক্ষমা চেয়েছিল কিন্তু অন্য মুসলমান তাকে ক্ষমা করেনি'। তারপর বালকটি মুক্তি পেল ।
বর্তমান সমাজে কি পাওয়া যাবে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের এই অপরূপ দৃষ্টান্ত??
যারা ইসলামকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তারা যেন দেখে নেয় ইসলামের সৌন্দর্য ! আলহামদুলিল্লাহ।।
পোস্টটি শেয়ার করার অনুরোধ রইলো ।
(সংগৃহীত)
উমর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুর শাসন আমল, একদিন ২জন লোক এক বালককে টেনে ধরে নিয়ে আসল তাঁর দরবারে । উমর রাঃ তাদের কাছে জানতে চাইলেন যে, 'ব্যাপার কি, কেন তোমরা একে এভাবে টেনে এনেছ ?' তারা বলল 'এই বালক আমাদের পিতাকে হত্যা করেছে ।'
উমর রাঃ বালকটিকে বললেন 'তুমি কি সত্যিই তাদের পিতাকে হত্যা করেছ ?' বালকটি বলল' হ্যা আমি হত্যা করেছি তবে তা ছিল দূর্ঘটনাবশত, আমার উট তাদের বাগানে ঢুকে পড়েছিল তা দেখে তাদের পিতা একটি পাথর ছুড়ে মারল,যা উটের চোখে লাগে । আমি দেখতে পাই যে উটটি খুবই কষ্ট পাচ্ছিল । যা দেখে আমি রাগান্বিত হই এবং একটি পাথর নিয়ে তার দিকে মারি, পাথরটি তার মাথায় লাগে এবং সে মারা যায় ।'
উমর (রাঃ) ২ভাইকে বলেলন 'তোমরা কি এ বালককে ক্ষমা করবে ?' তারা বলল 'না, আমরা তার মৃত্যূদন্ড চাই ।' উমর রাঃ বালকটির কাছে জানতে চাইলেন 'তোমার কি কোন শেষ ইচ্ছা আছে?' বালকটি বলল 'আমার আব্বা মারা যাওয়ার সময় আমার ছোট ভাইয়ের জন্য কিছু সম্পদ রেখে যান ,যা আমি এক জায়গায় লুকিয়ে রেখেছি ।
আমি তিন দিন সময় চাই, যাতে আমি সেই জিনিস গুলো আমার ভাইকে দিয়ে আসতে পারি । আমার কথা বিশ্বাস করুন ।' উমর রাঃ বললেন 'আমি তোমাকে বিশ্বাস করতে পারি যদি তুমি এক জন জামিন জোগাড় করতে পার যে নিশ্চয়তা দেবে যে তুমি ফিরে আসবে ?' বালকটি দরবারের চারদিকে তাকাল এত মানুষের মধ্যে কেউই তার জামিন হল না ।সবাই নিচের দিকে তাকিয়ে রইল।
হঠাত্ দরবারের পেছন থেকে একটি হাত উঠল । কার হাত ছিল এটি? প্রখ্যাত সাহাবী আবু যর গিফারী (রাঃ) , তিনি বললেন 'আমি তার জামিন হব' চিন্তা করুন জামিন মানে হল, যদি বালকটি ফিরে না আসে তবে আবু যর গিফারী রাঃ এর শিরচ্ছেদ করা হবে। সুতরাং, বালকটিকে ছেড়ে দেওয়া হল । এক দিন গেল, দ্বিতীয় দিনেও বালকটি আসল না, তৃতীয় দিনে ২ভাই আবু যর গিফারী (রাঃ) এর কাছে গেল ।
আবু যর (রাঃ) বললেন 'আমি মাগরিব পর্যন্ত অপেক্ষা করব'। মাগরিবের কিছুক্ষণ আগে আবু যর গিফারী (রাঃ) দরবারের দিকে রওনা হলেন । মদিনার লেকজন তাঁর পেছন পেছন যেতে লাগল । সবাই দেখতে চায় কি ঘটে ।আবু যর (রাঃ) একটি বালকের ভুলের কারণে আজ জীবন দিচ্ছেন । হঠাত্ আজানের কিছুক্ষণ আগে বালকটি দৌড়ে আসল । লোকেরা সবাই অবাক হল ।
উমর (রাঃ) বললেন 'হে বালক তুমি কেন ফিরে এসেছ? আমিতো তোমার পিছনে কোন লোক পাঠাইনি । কোন জিনিসটা তোমাকে ফিরিয়ে আনল?' বালকটি বলল 'আমি চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলিম কথা দিয়েছিল কিন্তু সে তা রাখেনি তাই আমি ফিরে এসেছি'। উমর (রাঃ) আবু যর (রাঃ) কে বললেন, 'হে আবু যর তুমি কেন এই বালকের জামিন হলে?'
আবু যর রাঃ বললেন, 'আমি দেখলাম একজন মুসলমানের সাহায্য প্রয়োজন, আমি চাই না যে, কেউ বলুক একজন মুসলমানের সাহায্য প্রয়োজন ছিল কিন্তু কোন মুসলমান তাকে সাহায্য করেনি।' এ কথা শুনে দুই ভাই বলল, 'আমরাও চাই না যে কেউ বলুক একজন মুসলমান ক্ষমা চেয়েছিল কিন্তু অন্য মুসলমান তাকে ক্ষমা করেনি'। তারপর বালকটি মুক্তি পেল ।
বর্তমান সমাজে কি পাওয়া যাবে মুসলিম ভ্রাতৃত্বের এই অপরূপ দৃষ্টান্ত??
যারা ইসলামকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে তারা যেন দেখে নেয় ইসলামের সৌন্দর্য ! আলহামদুলিল্লাহ।।
পোস্টটি শেয়ার করার অনুরোধ রইলো ।
(সংগৃহীত)
।। অসাধারণ - অনেক ভালো লাগলো ।। ^_^
উত্তরমুছুন