সোমবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৫

হিজ্‌রবাসীদের কাহিনী (কোরআনে বর্ণিত)


হিজ্রবাসীদের কাহিনী (কোরআনে বর্ণিত)

৮০) হিজ্রবাসীরাও রসূলদের প্রতি মিথ্যা আরোপ করেছিল৷ ( শূরা হিজর,৮০)

এটি ছিল সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় শহর মদীনার উত্তর পশ্চিমে বর্তমান আল'উলা শহরের কয়েক মাইল দূরে শহরটির ধবংসাবশেষ পাওয়া যায় মদীনা থেকে তাবুক যাবার সময় প্রধান সড়কের ওপরই জায়গাটি পড়ে উপত্যকাটির মধ্য দিয়ে কাফেলা এগিয়ে যায় কিন্তু নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশ অনুযায়ী কেউ এখানে অবস্থান করে না হিজরী আট শতকে পর্যটক ইবনে বতুতা হজ্জে যাবার পথে এখানে এসে পৌঁছেন তিনি লেখেন : " এখানে লাল রংয়ের পাহাড়গুলোতে সামুদ জাতির ইরামতগুলো রয়েছে এগুলো তারা পাহাড় কেটে কেটে তার মধ্যে নির্মাণ করেছিল গৃহগুলোর কারুকাজ এখনো এমন উজ্জ্বল তরতাজা আছে যেন মনে হয় আজই এগুলো খোদাই করা হয়েছে পচাগলা মানুষের হাড় এখনো এখানকার ঘরগুলো মধ্যে পাওয়া যায়

এটি আরবের প্রাচীন জাতিগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় জাতি আদের পরে এরাই সবচেয়ে বেশী খ্যাতি পরিচিত অর্জন করে কুরআন নাযিলের পূর্বে এদের কাহিনী সাধারণ মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত ছিল জাহেলী যুগের কবিতা, খুতবা সাহিত্যে এর ব্যাপক উল্লেখ পাওয়া যায় আসিরিয়ার শিলালিপি, গ্রীস, ইসকানদারীয়া রোমের প্রাচীন ঐতিহাসিক ভুগোলবিগণও এর উল্লেখ করেছেন ঈসা আলাইহিস সালামের জন্মের কিছুকাল পুর্বে জাতির কিছু কিছু লোক বেঁচেছিল রোমীয় ঐতিহাসিকগণের মতে, এরা রোমীয় সেনাবাহিনীতে ভর্তি হয়ে এদের শত্রু নিবতীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে


উত্তর পশ্চিম আরবের যে এলাকটি আজো 'আল হিজর' নামে খ্যাত সেখানেই ছিল এদের আবাস আজকের সউদী আরবের অন্তর্গত মদীনা তাবুকের মাঝখানে হিজায রেলওয়ের একটি ষ্টেশন রয়েছে, তার নাম মাদায়েনে সালেহ।এটিই ছিল সামুদ জাতির কেন্দ্রীয় স্থান। প্রাচীনকালে এর নাম ছিল হিজর।সামূদ জাতির লোকেরা পাহাড় কেটে যেসব বিপুলায়তন ইমারত নির্মাণ করেছিল এখনো হাজার হাজার একর এলাকা জুড়ে সেগুলো অবস্থান করছে। নিঝুম পুরীটি দেখে আন্দাজ করা যায় যে এক সময়ে নগরীর জনসংখ্যা চার পাঁচ লাখের কম ছিল না। কুরআন নাযিল হওয়ার সময়কালে হেজাযের ব্যবসায়ী কাফেলা

প্রাচীন ধ্বংসাবশেষের মধ্যে দিয়ে অতিক্রম করতো। তাবুক যুদ্ধের সময় নবী সাল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম যখন এলাকা অতিক্রম করছিলেন তখন তিনি মুসলমানদেরকে শিক্ষানীয় নিদর্শনগুলো দেখান এবং এমন শিক্ষা দান করেন যা ধরনের ধ্বংসাবশেষে থেকে একজন বুদ্ধিমান বিচক্ষণ ব্যক্তির শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত।এ জায়গায় তিনি একটি কুয়ার দিকে অংগুলি নির্দেশ করে বলেন, কুয়াটি থেকে হযরত সালেহের উটনী পানি পান করতো। তিনি মুসলমানদেরকে একমাত্র কুয়াটি থেকে পানি পান করতে বলেন এবং অন্য সমস্ত কুয়া থেকে পানি পান করতে নিষেধ করেন। একটি গিরিপথ দেখিয়ে তিনি বলেন, গিরিপথ দিয়ে হযরত সালেহের উটনীটি পানি পান করতে আসতো।তাই সেই স্থানটি আজো ফাজ্জুন নাকাহ বা উটনীর পথ নামে খ্যাত হয়ে আছে। তাদের ধ্বংসস্তুপগুলোর মধ্যে যেসব মুসলমান ঘোরাফেরা করছিল তাদেরকে একত্র করে তিনি একটি ভাষণ দেন। ভাষণে সামুদ জাতির ভয়াবহ পরিণাম তাদেরকে শিক্ষা গ্রহণের উপদেশ দিয়ে তিনি বলেন, এটি এমন একটি জাতির এলাকা যাদের ওপর আল্লাহর আযাব নাযিল হয়েছিল। কাজেই স্থানটি দ্রুত অতিক্রম করে চলে যাও। এটা ভ্রমনের জায়গা নয় বরং কান্নার জায়গা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন