শুক্রবার, ২৭ জুলাই, ২০১২

বনী মুসতালিক গোত্রেi কাহিনী এবং খবর যাঁচাই ও অনুসন্ধান করার নীতি


বনী মুসতালিক গোত্রেi কাহিনী  এবং খবর যাঁচাই অনুসন্ধান করার নীতি

বনী মুসতালিক গোত্র মুসলমান হলে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের থেকে যাকাত আদায় করে আনার জন্য ওয়ালীদ ইবনে উকবাকে পাঠালেন সে তাদের এলাকায় পৌছে কোন কারণে ভয় পেয়ে গেল এবং গোত্রের লোকদের কাছে না গিয়েই মদীনায় ফিরে গিয়ে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে বলে অভিযোগ করলো যে, তারা যাকাত দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং আমাকে হত্যা করতে উদ্যত হয়েছে খবর শুনে নবী ( সা) অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হলেন এবং তাদের শায়েস্তা করার জন্য এক দল সেনা পাঠাতে মনস্থ করলেন কোন কোন হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, যে তিনি সেনাদল পাঠিয়েছিলেন এবং কোন কোনটিতে বর্ণিত হয়েছে যে, পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন মোটকথা, বিষয়েই সবাই একমত যে, সময় বনী মুসতালিক গোত্রের নেতা হারেস ইবনে দ্বেরার ( উম্মুল মু'মিনীর হযরত জুয়াইরিয়ার পিতা) এক প্রতিনিধি দল নিয়ে নবীর ( সা) খেদমতে হাজির হন তিনি বললেনঃ আল্লাহর কসম যাকাত দিতে অস্বীকৃতি এবং ওয়ালীদকে হত্যা করার চেষ্টা তো দূরের কথা তার সাথে আমাদের সাক্ষাত পর্যন্ত হয়নি আমরা ঈমানের ওপর অবিচল আছি এবং যাকাত প্রদানে আদৌ অনিচ্ছুক নই

 
নাজুক পরিস্থিতিতে যখন একটি ভিত্তিহীন খবরের ওপর নির্ভর করার কারণে একটি বড় ভুল সংঘটিত হওয়ার উপক্রম হয়েছিলো, সে মুহূর্তে আল্লাহ তা'আলা মুসলমানদেরকে মৌলিক নির্দেশটি জানিয়ে দিলেন যে, যখন তোমরা এমন কোন গুরুত্বপূর্ণ খবর পাবে যার ভিত্তিতে বড় রকমের কোন ঘটনা সংঘটিত হতে পারে তখন তা বিশ্বাস করার পূর্বে খবরের বাহক কেমন ব্যক্তি তা যাঁচাই করে দেখো সে যদি কোন ফাসেক লোক হয় অর্থাৎ যার বাহ্যিক অবস্থা দেখেই প্রতীয়মান হয় যে, তার কথা নির্ভরযোগ্য নয় তাহলে তার দেয়া খবর অনুসারে কাজ করার পূর্বে প্রকৃত ঘটনা কি তা অনুসন্ধান করে দেখো আল্লাহর হুকুম থেকে শরীয়াতের একটি নীতি পাওয়া যায় যার প্রয়োগ ক্ষেত্র অত্যন্ত ব্যাপক নীতি অনুসারে যার চরিত্র কাজ-কর্ম নির্ভরযোগ্য নয় এমন কোন সংবাদদাতার সংবাদের ওপর নির্ভর করে কোন ব্যক্তি গোষ্ঠী কিংবা জাতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ ইসলামী সরকারের জন্য বৈধ নয় নীতির ভিত্তিতে হাদীস বিশারদগণ হাদীস শাস্ত্রে, "জারহ, তা'দীল, এর নীতি উদ্ভাবন করেছেন যাতে যাদের মাধ্যমে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসমূহ পরবর্তী বংশধরদের কাছে পৌছেছিলো তাদের অবস্থা যাঁচাই বাছাই করতে পারেন তাছাড়া সাক্ষ আইনের ক্ষেত্রে ফকীহগণ নীতি নির্ধারণ করেছেন যে, এমন কোন ব্যাপারে ফাসেক ব্যক্তির সাক্ষ গ্রহণযোগ্য হবে না যার দ্বারা শরীয়াতের কোন নির্দেশ প্রমাণিত হয় কিংবা কোন মানুষের ওপর কোন অধিকার বর্তায় তবে ব্যাপারে পণ্ডিতগণ একমত যে, সাধারণ পার্থিব ব্যাপারে প্রতিটি খবরই যাঁচাই অনুসন্ধান করা এবং খবরদাতার নির্ভরযোগ্য হওয়ার ব্যপারে নিশ্চিত হওয়া জরুরী নয় কারণ আয়াতে ( ) শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে শব্দটি সব রকম খবরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়, শুধু গুরুত্বপূর্ণ খবরের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কারণে ফকীহগণ বলেন, সাধারণ খুঁটিনাটি ব্যাপারে নীতি খাটে না উদাহরণ স্বরূপ আপনি কারো কাছে গেলেন এবং বাড়ীতে প্রবেশ করার অনুমতি চাইলেন বাড়ীর ভিতর থেকে কেউ এসে বললো, আসুন ক্ষেত্রে আপনি তার কথার ওপর নির্ভর করে প্রবেশ করতে পারেন বাড়ীর মালিকের পক্ষ থেকে অনুমতির সংবাদদাতা সৎ না অসৎ ক্ষেত্রে তা দেখার প্রয়োজন নেই অনুরূপ ফকীহগণ ব্যাপারেও একমত যেসব লোকের ফাসেকী মিথ্যাচার চারিত্রিক অসততার পর্যায়ের নয়, বরং আকীদা-বিকৃতির কারণে ফাসেক বলে আখ্যায়িত তাদে সাক্ষ এবং বর্ণনাও গ্রহণ করা যেতে পারে শুধু আকীদা খারাপ হওয়া তাদের সাক্ষ বর্ণনা গ্রহণ করার ব্যাপারে প্রতিবন্ধক নয়

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন